train1

ভৈরব টু সিলেট ট্রেনের সময়সূচী

ভৈরব থেকে সিলেট রেলপথ বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও ব্যস্ততম ট্রেন রুটগুলোর একটি। এ রুটে প্রতিদিন হাজারো মানুষ যাতায়াত করেন কর্মস্থল, ব্যবসা কিংবা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে। ট্রেন ভ্রমণ এই পথে যাত্রীদের জন্য একদিকে যেমন আরামদায়ক, অন্যদিকে তেমনি সাশ্রয়ী। সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, চা বাগান ও পাহাড়ি দৃশ্য দেখতে ভৈরব থেকে ট্রেনে যাওয়া অনেকের কাছে আনন্দের বিষয়।

বাংলাদেশ রেলওয়ে এই রুটে একাধিক ইন্টারসিটি ও মেইল ট্রেন চালু রেখেছে, যাতে সকাল, দুপুর ও রাতের সময়ে যাত্রীরা সহজে ট্রেন ধরতে পারেন। ট্রেনে যাতায়াত করলে সময় বাঁচে এবং সড়কপথের যানজট থেকেও মুক্ত থাকা যায়। বিশেষত ছুটির মৌসুমে ভৈরব-সিলেট ট্রেন টিকিটের চাহিদা বেড়ে যায়।

টিকিট কেনা, সময়সূচী জানা বা ভাড়া সম্পর্কে জানতে এখন অনলাইনে সব কিছুই সহজলভ্য। রেলওয়ের ওয়েবসাইট ও “রেল সেবা” মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে আপনি ঘরে বসেই টিকিট বুক করতে পারেন। এছাড়া স্টেশন কাউন্টার থেকেও সরাসরি টিকিট পাওয়া যায়। এই গাইডে আপনি পাবেন ভৈরব থেকে সিলেট ট্রেনের সময়সূচী, টিকিট কেনার নিয়ম এবং ভ্রমণ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

ভৈরব টু সিলেট ট্রেনের সময়সূচী

train2

ভৈরব থেকে সিলেটের পথে প্রতিদিন একাধিক ট্রেন চলাচল করে। কিছু ট্রেন সকালে ছেড়ে দুপুরে সিলেটে পৌঁছে, আবার কিছু বিকেলে ছেড়ে রাতের দিকে পৌঁছায়। সময়সূচী ও ভাড়া ট্রেনের ধরন অনুযায়ী ভিন্ন হয়। ইন্টারসিটি ট্রেনে ভাড়া একটু বেশি হলেও আরামদায়ক সেবা পাওয়া যায়। নিচের টেবিলে জনপ্রিয় ট্রেনগুলোর আনুমানিক সময়সূচী ও ভাড়া তুলে ধরা হলো —

ট্রেনের নামভাড়া (প্রায়)প্রথম ট্রিপ (ভৈরব থেকে)শেষ ট্রিপ (সিলেট থেকে)ফ্রিকোয়েন্সি
পারাবত এক্সপ্রেস২৮০–৬৫০সকাল ৭:৩০বিকেল ৩:৫০প্রতিদিন (মঙ্গলবার বন্ধ)
জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস২৫০–৬০০দুপুর ১২:০০সন্ধ্যা ৫:১০প্রতিদিন (বৃহস্পতিবার বন্ধ)
উপবন এক্সপ্রেস২৮০–৬৫০রাত ১১:০০সকাল ৬:৪৫প্রতিদিন (বুধবার বন্ধ)
কালনী এক্সপ্রেস৩০০–৭০০বিকেল ৪:০০সকাল ৬:০০প্রতিদিন (শুক্রবার বন্ধ)
সুরমা মেইল১৮০–৩৫০রাত ১০:১০সকাল ৮:০০প্রতিদিন

উপরের সময় ও ভাড়া পরিবর্তনশীল, তাই ভ্রমণের আগে বাংলাদেশ রেলওয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা “রেল সেবা” অ্যাপে সর্বশেষ তথ্য দেখে নিন।

কাউন্টার ও যোগাযোগ নম্বর সমূহ 

ভৈরব ও সিলেট উভয় স্টেশনে বাংলাদেশ রেলওয়ের অফিসিয়াল টিকিট কাউন্টার রয়েছে। এছাড়া অনলাইন সেবা ও হেল্পলাইন থেকেও তথ্য নেওয়া যায়। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাউন্টারের তথ্য দেয়া হলো —

কাউন্টার নামঅবস্থানযোগাযোগ নম্বর
ভৈরব রেলস্টেশন কাউন্টারভৈরব বাজার, কিশোরগঞ্জস্টেশন অফিস নম্বর (হেল্পলাইন ১৩১)
সিলেট রেলস্টেশন কাউন্টারস্টেশন রোড, সিলেট সদরস্টেশন অফিস নম্বর (হেল্পলাইন ১৩১)
বাংলাদেশ রেলওয়ে হেল্পলাইনসারাদেশ১৩১ / www.eticket.railway.gov.bd

ট্রেনের টিকিট ও সময় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে সর্বদা অফিসিয়াল উৎসের তথ্য অনুসরণ করা উচিত। অননুমোদিত টিকিট বিক্রেতা বা সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত নম্বর থেকে দূরে থাকুন।

ট্রেনের টিকেট কেনার পদ্ধতি?

train3

বাংলাদেশে ট্রেনের টিকিট কেনা এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ। আপনি অনলাইন, মোবাইল অ্যাপ বা সরাসরি কাউন্টার—যেকোনো মাধ্যমেই টিকিট বুক করতে পারেন। নিচে ধাপে ধাপে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো —

অনলাইন টিকিট বুকিং (eticket.railway.gov.bd):

বাংলাদেশ রেলওয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে প্রথমে একটি একাউন্ট খুলুন। তারপর যাত্রার তারিখ, প্রস্থান ও গন্তব্য স্টেশন এবং ট্রেনের শ্রেণি (শোভন, শোভন চেয়ার, স্নিগ্ধা, ফার্স্ট সিট বা এসি) নির্বাচন করুন। এরপর সিট সিলেক্ট করে বিকাশ, নগদ বা ব্যাংক কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট সম্পন্ন করুন। পেমেন্ট শেষে ইমেইল বা এসএমএসে ই-টিকিট পাবেন।

রেল সেবা মোবাইল অ্যাপ:

 গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে “Rail Sheba” অ্যাপ ডাউনলোড করুন। একাউন্ট তৈরি করে একইভাবে ট্রেন নির্বাচন, সিট বুকিং ও পেমেন্ট করুন। মোবাইল অ্যাপে বুক করা টিকিট সরাসরি মোবাইল স্ক্রিন থেকেই ট্রেনে দেখানো যায়, আলাদা প্রিন্টের দরকার হয় না।

 স্টেশন কাউন্টার থেকে টিকিট:

যদি অনলাইন না পারেন, তাহলে সরাসরি ভৈরব বা সিলেট রেলস্টেশনের কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে পারেন। জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে কাউন্টারে যাত্রার তারিখ ও ট্রেনের নাম উল্লেখ করে টিকিট নিন।

টিকিট বাতিল ও রিফান্ড নিয়ম:

অনলাইনে বা কাউন্টারে কেনা টিকিট নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাতিল করা যায়। সময় অনুযায়ী কিছু টাকা কাটা যায়, বাকিটা ফেরত মেলে। বিস্তারিত নিয়ম রেলওয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে।

ভ্রমণের আগে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি:

যাত্রার অন্তত ৩০ মিনিট আগে স্টেশনে পৌঁছান।টিকিট ও জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখুন।ব্যাগে নাম ও নম্বর লিখে রাখুন। টিকিট অনলাইনে বুক করলে ফোনে কনফার্মেশন দেখাতে ভুলবেন নাঅফিসিয়াল সময়সূচী যাচাই করে নিন, কারণ সময় পরিবর্তন হতে পারে।

নিরাপত্তা টিপস:

রাতে যাত্রা করলে মূল্যবান জিনিস সুরক্ষিত রাখুন। ট্রেনের নিরাপত্তা কর্মীদের নির্দেশনা অনুসরণ করুন এবং অপরিচিত কাউকে ব্যাগ বা টিকিট দেখাবেন না।

ভৈরব থেকে সিলেটের সবচেয়ে ভালো ট্রেন কোনটি?

পারাবত এক্সপ্রেস এবং জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস এই রুটের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও আরামদায়ক ট্রেন। সময় মেনে চলে এবং সেবাও ভালো, তাই যাত্রীরা এগুলোকে বেশি পছন্দ করেন।

অনলাইনে টিকিট বুক করার জন্য কী লাগবে?

অনলাইনে টিকিট বুক করতে হলে একটি সক্রিয় মোবাইল নাম্বার, ইমেইল এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য প্রয়োজন হয়। পেমেন্টের জন্য বিকাশ, নগদ বা ব্যাংক কার্ড ব্যবহার করা যায়। টিকিট বুকিং শেষে ই-টিকিট মোবাইলে পেয়ে যাবেন।

ভৈরব থেকে সিলেটের সবচেয়ে ভালো ট্রেন কোনটি?

পারাবত এক্সপ্রেস এবং জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস এই রুটের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও আরামদায়ক ট্রেন। সময় মেনে চলে এবং সেবাও ভালো, তাই যাত্রীরা এগুলোকে বেশি পছন্দ করেন।

অনলাইনে টিকিট বুক করার জন্য কী লাগবে?

অনলাইনে টিকিট বুক করতে হলে একটি সক্রিয় মোবাইল নাম্বার, ইমেইল এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য প্রয়োজন হয়। পেমেন্টের জন্য বিকাশ, নগদ বা ব্যাংক কার্ড ব্যবহার করা যায়। টিকিট বুকিং শেষে ই-টিকিট মোবাইলে পেয়ে যাবেন।

উপসংহার

ভৈরব থেকে সিলেট ট্রেন ভ্রমণ শুধু সুবিধাজনকই নয়, বরং একটি আরামদায়ক ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা। যারা প্রকৃতি ভালোবাসেন, তাদের জন্য এই পথের দৃশ্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর। ট্রেনে যাতায়াতের মাধ্যমে সময় ও খরচ দুটোই বাঁচানো সম্ভব। রেলওয়ের আধুনিক টিকিটিং সিস্টেম যাত্রীদের সেবা আরও সহজ করেছে।

যাত্রার আগে অফিসিয়াল সময়সূচী ও টিকিট যাচাই করে নিন, বিশেষ করে ছুটির মৌসুমে। সরকারি রেল সেবা ব্যবহার করুন এবং অননুমোদিত টিকিট বিক্রেতাদের থেকে দূরে থাকুন। আশা করি এই গাইডটি আপনার ভৈরব থেকে সিলেট ট্রেন ভ্রমণকে আরও সহজ ও আনন্দদায়ক করে তুলবে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *