সান্তাহার থেকে ঢাকা ট্রেনের সময়সূচী
সান্তাহার (Santahar Junction) বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান রেল নোড। সান্তাহার থেকে ঢাকা যাওয়া দেশের সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন রুটগুলোর একটি—যাত্রীরা ব্যবসা, পড়াশোনা, চিকিৎসা ও ব্যক্তিগত কাজে দিনে দিনে বেশি করে এই লাইনে ভ্রমণ করেন। রেলপথে পরিবেশ ভ্রমণ সাশ্রয়ী, নিরাপদ এবং মাঝে মাঝে দ্রুতও।
সান্তাহার থেকে ঢাকায় পৌঁছতে গড়ে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা লাগে; তবে ট্রেনের ধরন, থামার সংখ্যা ও রুটের উপর নির্ভর করে সময় কিছুটা বাড়া-কমা হতে পারে। সান্তাহার জংশন থেকে সকাল, বেলা ও রাত—সব সময়েই বিভিন্ন আন্তঃনগর ট্রেন পাওয়া যায়, ফলে যাত্রা পরিকল্পনা করা সহজ।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-টিকেটিং ও মোবাইল অ্যাপ সুবিধার কারণে এখন ঘরে বসেই টিকিট বুক করে যাত্রা করা যায়, ফলে কাউন্টারে লাইন অপেক্ষা কমে এসেছে। নিচে আপনি সহজ ভাষায় সান্তাহার—ঢাকা রুটের সময়সূচী, যোগাযোগ ও টিকিট কেনার ধাপ অনুযায়ী পাবেন।
সান্তাহার থেকে ঢাকা ট্রেনের সময়সূচী

নিচের টেবিলটি সান্তাহার থেকে ঢাকাগামী জনপ্রিয় আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর সারসংক্ষেপ — ট্রেনের নাম, আনুমানিক ভাড়া, সান্তাহার থেকে প্রথম ছাড় ও ঢাকা পৌঁছার সময় এবং সার্ভিসের ফ্রিকোয়েন্সি/অফ-ডে। টেবিলটি সাধারণ অভিমুখ দিচ্ছে; চূড়ান্ত সময় ও ভাড়া নিশ্চিত করতে যাত্রার আগে অফিসিয়াল ই-টিকেট সাইট বা স্টেশন থেকে যাচাই করে নিন।
নোট: উপরোক্ত সময় ও ভাড়া আনুমানিক—কখনো কখনো রুট অনুযায়ী ট্রেন নম্বর ভিন্ন হতে পারে। সর্বশেষ ও নির্ভুল সময়ের জন্য অনুরোধ করা হলো অফিসিয়াল রেলওয়ে পেজ বা ই-টিকেটিং সিস্টেম দেখার।
টেবিলে উল্লেখিত ট্রেন নাম, কাউন্টার নাম ও মোবাইল নম্বর সমূহ
টিকিটকাটা ও তথ্যের জন্য স্থানীয় স্টেশন কাউন্টার ও রেলওয়ের হেল্পলাইন খুবই কাজে লাগে। নিচে সান্তাহার ও ঢাকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কনট্যাক্ট নম্বর ও কাউন্টার তথ্য দেওয়া হলো; জরুরি অবস্থায় রেলওয়ের কেন্দ্রীয় হেল্পলাইনও কাজে লাগবে। এগুলো স্ট্যান্ডার্ড যোগাযোগ—আপনি আরো নির্দিষ্ট কাউন্টার নম্বর জানতে স্টেশনে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন।
সতর্কতা: সামাজিক নেটওয়ার্কে পরিচালিত তৃতীয় পক্ষের টিকেট বিক্রেতাদের প্রতারণা রিলেটেড অভিযোগ আছে—অফিশিয়াল পোর্টাল ও লাইসেন্সপ্রাপ্ত অ্যাপে বুকিং করুন।
ট্রেনের টিকেট কেনার পদ্ধতি?

নীচে ধাপে ধাপে বাংলাদেশ ভিত্তিক সম্পূর্ণ টিকিট কেনার পদ্ধতি দিলাম—অফলাইন ও অনলাইন উভয় পদ্ধতি কভার করা আছে। প্রতিটি ধাপ সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করা আছে যাতে আপনি ঝামেলা ছাড়াই টিকিট বুক করতে পারেন। (এই অংশে মোটামুটি ৩০ লাইন/বাতাসের মতো সোজা ধাপে সাজানো।)
প্রথমে সিদ্ধান্ত নিন—অনলাইন বইবেন না কি কাউন্টারে গিয়ে টিকেট নেবেন। অনলাইন সুবিধা হলে সময় বাঁচে; কাউন্টারে গেলে সাহায্য নিতে পারবেন।
অনলাইন বুকিং: অফিসিয়াল ই-টিকেট পোর্টালটি হল eticket.railway.gov.bd অথবা Rail Sheba (Railway) মোবাইল অ্যাপ। এগুলোই নিরাপদ ও সরকারি অনুমোদিত।
একাউন্ট তৈরি: ই-টিকেট সাইটে মোবাইল নম্বর, ইমেইল ও NID/পাসপোর্ট (যদি দরকার) দিয়ে একাউন্ট খুলুন; OTP/ভেরিফিকেশন করতে হতে পারে।
লগইন করে “From” এ Santahar এবং “To” তে Dhaka সিলেক্ট করুন; যাত্রার তারিখ দিন। সার্চ করলে উপলব্ধ ট্রেনগুলোর লিস্ট দেখাবে।
ট্রেন ও শ্রেণি নির্বাচন: শোভন, শোভন চেয়ার, স্নিগ্ধা, এসি চেয়ার বা এসি বার্থ—আপনি যেটা চান তা বেছে নিন। ভাড়া শ্রেণি অনুযায়ী পরিবর্তিত হবে।
সিট নির্বাচন: সিস্টেমে উপলব্ধ সিট দেখালে চান এমন সিট সিলেক্ট করে কনফার্ম করুন। অনেক সময় পিক সময়ে সিট দ্রুত শেষ হয়ে যায়—আগেই বুক করুন।
পেমেন্ট পদ্ধতি: বিকাশ, নগদ (Rocket/Nagad), ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড অথবা ব্যাংক ট্রান্সফার—সরকারি সাইটে যে পেমেন্ট অপশন দেখায় তা ব্যবহার করুন। তৃতীয় পক্ষের ওয়ালেট/পেজ থেকে কেনা হলে অতিরিক্ত ঝুঁকি থাকে।
ই-টিকিট সংগ্রহ: পেমেন্ট সফল হলে আপনার মোবাইলে/ইমেইলে ই-টিকিট চলে আসবে; কেউ প্রিন্ট করে নিতেও পারেন, কিন্তু মোবাইলে দেখিয়েই ভ্রমণ সম্ভব।
কাউন্টার থেকে টিকিট: যদি অনলাইন না করেন, স্টেশন রেল কাউন্টারে গিয়ে ট্রেন নাম ও তারিখ বলুন; কাগজী টিকিট পেতে NID বা পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখুন। সকাল-বিকাল পিক টাইমে লাইনে লাগতে পারে।
রিফান্ড ও বাতিল নীতি: অনলাইন টিকিট বাতিল করলে নির্দিষ্ট কেটে ফেরত নীতিমালা থাকে; যাত্রা ছাড়ার আগেই বাতিল করলে বেশি রিফান্ড পাবেন—কিন্তু আগের দিনে বা নো-শো-নো-রিফান্ড অপশনে ফি বেশি। অফিসিয়াল পোর্টালে বাতিল নীতিটি পড়ে নিন।
গ্রুপ/ট্যুর বুকিং: যদি বেশি সিট লাগবে, তত্ক্ষণাত স্টেশন অফিস বা ই-টিকেটিং সাপোর্টে যোগাযোগ করে গ্রুপ বুকিং নিন—কিছু সময়ে প্রত্যাশিত সিট ব্লক করা যায়।
বিশেষ ছাড় ও ছুটির দিনে ব্যবস্থা: ঈদ/পহেলা বৈশাখ/বড় উৎসবে অতিরিক্ত সার্ভিস বা স্পেশাল ট্রেন চালানো হতে পারে—সেগুলোর বিজ্ঞপ্তি রেলওয়ে পোর্টালে দেয়া হয়। দ্রুত ফাঁক পেলে আগে থেকেই বুক করতে হবে।
পরামর্শ: যাত্রা কমবয়সী/বৃদ্ধ সঙ্গে হলে আগেভাগে সিট বেছে নিন; রাতে যাত্রা করলে প্রয়োজনীয় জিনিস (ওয়াটার, হালকা খাবার) সঙ্গে নিন; স্টেশনে সময়মতো উপস্থিত থাকুন।
সাহায্য দরকার? রেলওয়ের হেল্পলাইন ১৩১-এ ফোন করুন বা Rail Sheba অ্যাপের হেল্প সেকশন ব্যাবহার করুন।
সান্তাহার থেকে ঢাকায় কোন ট্রেনগুলো সবচেয়ে দ্রুত পৌঁছে?
অনেক ট্রেন গড়ে ৫–৬ ঘণ্টার মধ্যেই ঢাকা পৌঁছে—Drutajan, Lalmoni, Ekota ও Panchagarh এক্সপ্রেসগুলি সাধারণত দ্রুততম অপশনগুলোর মধ্যে; তবে নির্দিষ্ট ট্রেন ও দিনের ওপর ভ্রমণের সময় মিলবে। সর্বশেষ সময় যাচাই করে নিন।
অনলাইনে টিকেট কিনতে কি কি দরকার হবে এবং কিভাবে নিরাপদে এন্ট্রি করব?
সরকারি ই-টিকেটিং পোর্টালে একটি রেজিস্টার্ড মোবাইল নম্বর, NID/পরিচয় পত্র এবং পেমেন্ট মাধ্যম (বিকাশ/নগদ/কার্ড) লাগে। সর্বদা সরকারি পোর্টাল (eticket.railway.gov.bd) বা Rail Sheba অ্যাপ ব্যবহার করুন—তৃতীয় পক্ষের অনিশ্চিত সাইট এড়িয়ে চলুন।
উপসংহার
সান্তাহার থেকে ঢাকা যাত্রা রেলপথে সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য ও তুলনায় আরামদায়ক। উপরের সময়সূচী আপনাকে একটি ধারণা দেবে কোন ট্রেনে কখন যে সুবিধা পাওয়া যায়—তবে চূড়ান্ত নিশ্চিতকরণের জন্য অফিসিয়াল ই-টিকিট সাইট/অ্যাপ বা স্টেশন কন্ডাক্ট দেখুন।
ই-টিকেটিং সেবা চালু হওয়ায় লোকাল কাউন্টার বাড়তি চাপ কমেছে, কিন্তু উৎসব বা শীর্ষ সিজনে আগেভাগে বুকিং করাই বুদ্ধিমানের। ট্রেনে ভ্রমণ করার সময় নিরাপত্তা ও পারিপার্শ্বিক আচরণ মেনে চলুন—রাস্তাঘাটে নয়, ট্রেনে করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করুন।
সান্তাহার—ঢাকা রুটটি উত্তরাঞ্চলকে রাজধানীর সঙ্গে যুক্ত রাখে; তাই নিয়মিত যাত্রীরা ও নতুন ভ্রমণকারীরা দু’জনেই উপকৃত হন।
