bus1

সাতক্ষীরা টু রাজশাহী বাস সার্ভিস

সাতক্ষীরা থেকে রাজশাহী রুটটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক যোগাযোগ পথ। এই পথে প্রতিদিন বহু মানুষ ব্যবসা, শিক্ষা, চিকিৎসা কিংবা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে যাতায়াত করে থাকেন। সাতক্ষীরা জেলা থেকে রাজশাহী যেতে বাসে প্রায় ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা সময় লাগে, যা রাস্তার অবস্থা ও ট্রাফিকের উপর নির্ভরশীল।

এই দীর্ঘ পথে এসি ও নন-এসি দুই ধরনের কোচ সার্ভিস চালু আছে, ফলে যাত্রীরা নিজেদের সুবিধা ও বাজেট অনুযায়ী বাস বেছে নিতে পারেন।
এই রুটে বর্তমানে বেশ কয়েকটি পরিচিত বাস কোম্পানি যেমন হানিফ এন্টারপ্রাইজ, দেশ ট্রাভেলস, গ্রিন লাইন, সোহাগ ট্রাভেলসসহ স্থানীয় কিছু সার্ভিস প্রতিদিন নিয়মিত ট্রিপ পরিচালনা করছে। 

যাত্রীরা এখন সহজেই অনলাইন বুকিংয়ের মাধ্যমে টিকিট কেটে নিতে পারেন—যেমন শোহোজ (Shohoz), বিডি টিকিটস (BDTickets) বা বুক মাই ট্রিপ (BookMyTrip) ওয়েবসাইট থেকে।

অফলাইনে টিকিট নিতে চাইলে সাতক্ষীরা শহরের বড় বাস টার্মিনালে কাউন্টার থেকেও টিকিট সংগ্রহ করা যায়। যাত্রীদের সুবিধার্থে অধিকাংশ অপারেটর ফোনে সিট রিজার্ভ ও বুকিং কনফার্মের সুযোগ দেয়।সাতক্ষীরা-যশোর-খুলনা হয়ে রাজশাহী পর্যন্ত এই রুটের রাস্তা এখন আগের চেয়ে অনেক উন্নত, তাই যাত্রা আরও আরামদায়ক ও দ্রুত হচ্ছে। নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণ নিশ্চিত করতে যাত্রার আগে সময়সূচী ও টিকিট সংক্রান্ত তথ্য জেনে নেওয়াই শ্রেয়।

সাতক্ষীরা টু রাজশাহী বাস সার্ভিস

bus2

সাতক্ষীরা থেকে রাজশাহী রুটে প্রতিদিন বিভিন্ন সময়ের ট্রিপ রয়েছে। সাধারণত সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই রুটে বাস চলাচল করে। প্রতিটি অপারেটরের সময়সূচী, ভাড়া এবং ট্রিপ ফ্রিকোয়েন্সি ভিন্ন হতে পারে। নিচের টেবিলে জনপ্রিয় কিছু বাস কোম্পানির সম্ভাব্য ভাড়া, প্রথম ও শেষ ট্রিপের সময় এবং ফ্রিকোয়েন্সি তুলে ধরা হলো।
এই তথ্য যাত্রীদের ধারণা দেওয়ার জন্য, তাই যাত্রার আগে অপারেটরের ওয়েবসাইট বা কাউন্টারে যোগাযোগ করে সময় ও ভাড়া নিশ্চিত করা উচিত।

বাস কোম্পানিভাড়া (প্রায়)প্রথম ট্রিপশেষ ট্রিপদৈনিক ফ্রিকোয়েন্সি
হানিফ এন্টারপ্রাইজ৭০০–১,২০০সকাল ৬:০০রাত ১১:০০৩–৪ বার
দেশ ট্রাভেলস৬৫০–১,১০০সকাল ৭:০০রাত ১০:০০২–৩ বার
গ্রিন লাইন পরিবহন৮০০–১,৩০০সকাল ৬:৩০রাত ৯:৩০২ বার
সোহাগ ট্রাভেলস৭০০–১,২০০সকাল ৮:০০রাত ১০:৩০২–৩ বার
স্থানীয় এক্সপ্রেস সার্ভিস৫০০–৮০০সকাল ৫:৩০রাত ১১:৩০পরিবর্তনশীল

এই রুটে সাধারণত এসি ও নন-এসি দুই ধরনের সার্ভিস চালু থাকে। এসি কোচে যাত্রা একটু বেশি আরামদায়ক এবং দীর্ঘ যাত্রায় বিশ্রাম নেওয়া যায়, তবে নন-এসি বাসগুলো তুলনামূলকভাবে কম খরচে যাত্রী বহন করে।

কাউন্টার নাম ও মোবাইল নম্বর সমূহ 

এই রুটে যাত্রীদের সহায়তার জন্য সাতক্ষীরা ও রাজশাহী দুই প্রান্তেই বিভিন্ন বাস কোম্পানির নিজস্ব কাউন্টার রয়েছে। নিচে জনপ্রিয় বাসগুলোর সম্ভাব্য কাউন্টার তথ্য দেওয়া হলো।

সাতক্ষীরা থেকে যাত্রার আগে কাউন্টারে যোগাযোগ করলে সিট খালি আছে কিনা, বাসের ধরন (এসি/নন-এসি) এবং ছাড়ার সঠিক সময় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।

বাস নামকাউন্টার নামমোবাইল নম্বর (উদাহরণ)
হানিফ এন্টারপ্রাইজসাতক্ষীরা নিউ মার্কেট কাউন্টার০১৭১১-০০০০০০
দেশ ট্রাভেলসসাতক্ষীরা টার্মিনাল কাউন্টার০১৬১১-০০০০০০
গ্রিন লাইন পরিবহনখুলনা হয়ে সাতক্ষীরা রুট অফিস০১৭৩৩-০০০০০০
সোহাগ ট্রাভেলসসাতক্ষীরা সদর কাউন্টার০১৮১১-০০০০০০
স্থানীয় এক্সপ্রেস সার্ভিসকলারোয়া বাসস্ট্যান্ড০১৯২২-০০০০০০

উল্লেখ্য, মোবাইল নম্বরগুলো উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করা হয়েছে। যাত্রার আগে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা অনলাইন বুকিং প্ল্যাটফর্ম থেকে সর্বশেষ কাউন্টার নম্বর যাচাই করা উচিত।

বাস টিকেট কেনার পদ্ধতি?

bus3

বাংলাদেশে এখন বাস টিকিট কেনা অনেক সহজ হয়েছে। আগের মতো লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হয় না—আপনি ঘরে বসেই অনলাইনে টিকিট কেটে নিতে পারেন। আবার চাইলে সরাসরি কাউন্টার থেকেও টিকিট সংগ্রহ করা যায়। নিচে বিস্তারিতভাবে ধাপে ধাপে টিকিট কেনার পদ্ধতি দেওয়া হলোঃ

ভ্রমণের তারিখ নির্ধারণ করুন: 

যাত্রার আগে আপনার রওনা দেওয়ার তারিখ ও সময় ঠিক করুন।

রুট নির্বাচন করুন: 

“সাতক্ষীরা → রাজশাহী” রুট সিলেক্ট করুন।

অপারেটর বাছাই করুন: 

কোন বাসে যাবেন (যেমন হানিফ, দেশ ট্রাভেলস, সোহাগ ইত্যাদি) সেটি নির্ধারণ করুন।

অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যান:

 Shohoz, BDTickets, Obhai বা অপারেটরের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।

সার্চ করুন: 

রুট ও তারিখ দিয়ে সার্চ দিন; সব উপলব্ধ বাস ও সময় দেখতে পাবেন।

সিট সিলেক্ট করুন:

 আপনার পছন্দ অনুযায়ী সিট (উইন্ডো/আইল/ফ্রন্ট) নির্বাচন করুন।

ভাড়া যাচাই করুন:

 টিকিট কনফার্ম করার আগে ভাড়া ও সার্ভিস চার্জ দেখে নিন।

পেমেন্ট করুন: 

বিকাশ, নগদ, রকেট, ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড বা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পেমেন্ট দিন।

ই-টিকিট সংগ্রহ করুন:

 পেমেন্ট সম্পন্ন হলে আপনার ফোনে বা ইমেইলে ই-টিকিট পাবেন।

টিকিট সংরক্ষণ করুন: 

স্ক্রিনশট বা প্রিন্ট কপি সঙ্গে রাখুন।

কাউন্টার বুকিং: 

অনলাইন না হলে সরাসরি কাউন্টার থেকে টিকিট নিতে পারেন।

সিট নিশ্চিত করুন: 

যাত্রার আগে ফোনে বা অনলাইনে সিট নিশ্চিত করা বুদ্ধিমানের কাজ।

ভাড়া ফেরত নীতি জানুন: 

যদি কোনো কারণে যাত্রা বাতিল হয়, ফেরত নীতি সম্পর্কে জানুন।

আগেভাগে পৌঁছান: 

বাস ছাড়ার অন্তত ৩০–৪৫ মিনিট আগে টার্মিনালে পৌঁছান।

লাগেজ নিয়ম জানুন: 

কিছু অপারেটর ব্যাগেজের জন্য অতিরিক্ত চার্জ নেয়, আগে জেনে নিন।

শিশু ও নারী যাত্রীদের জন্য সিট: 

কিছু বাসে নির্দিষ্ট সিট রিজার্ভ থাকে, প্রয়োজনে আগে জিজ্ঞেস করুন।

রাতের যাত্রা: 

যদি নাইট কোচে যান, নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে জেনে নিন।

বাতিল নীতি: 

যাত্রার ২৪ ঘণ্টা আগে বাতিল করলে কিছু অপারেটর আংশিক রিফান্ড দেয়।

গ্রুপ টিকিট: 

একসাথে একাধিক টিকিট কিনলে গ্রুপ ডিসকাউন্ট পেতে পারেন।

আবহাওয়া বিবেচনা করুন: 

বৃষ্টি বা রাস্তায় সংস্কার থাকলে সময় বেশি লাগতে পারে।

রিভিউ দেখুন: 

অনলাইন বুকিংয়ের আগে বাস কোম্পানির রিভিউ দেখে নিন।

ফিডব্যাক দিন:

 যাত্রার পর অভিজ্ঞতা জানিয়ে ফিডব্যাক দিলে ভবিষ্যৎ যাত্রীদের উপকার হয়।

চেক করুন টিকিট ডিটেইলস: 

গন্তব্য, সময় ও বাস নাম সঠিক আছে কিনা যাচাই করুন।

রিজার্ভেশন কনফার্ম করুন: 

ই-টিকিটের কোড বা বুকিং নম্বর সংরক্ষণ করুন।

বুকিং প্ল্যাটফর্ম হেল্পলাইন: 

কোনো সমস্যা হলে প্ল্যাটফর্মের হেল্পলাইন ব্যবহার করুন।

অফার বা ডিসকাউন্ট: 

অনেক সময় অনলাইন বুকিংয়ে ডিসকাউন্ট কোড থাকে, সেগুলো ব্যবহার করুন।

টিকিট যাচাই করুন:

 বাসে ওঠার সময় কনডাক্টরকে ই-টিকিট বা এসএমএস দেখাতে হবে।

ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন: 

পথে বিশ্রাম, খাবার ও নামার জায়গা আগে ঠিক করে রাখুন।

অনলাইন বুকিংয়ের সুবিধা: 

সিট নির্বাচন, ভাড়া তুলনা ও নিরাপদ পেমেন্ট সব এক জায়গায় হয়।

অফলাইন বুকিংয়ের সুবিধা: 

যারা ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করতে চান না, তারা সরাসরি কাউন্টার থেকে নিতে পারেন।

উপসংহার

সাতক্ষীরা থেকে রাজশাহী রুটটি বাংলাদেশের অন্যতম দীর্ঘ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি বাস রুট। এই রুটে এখন আধুনিক ও আরামদায়ক কোচগুলো নিয়মিত চলাচল করছে, যা যাত্রা সহজ করেছে। অনলাইন বুকিংয়ের কারণে টিকিট পাওয়া এখন অনেক সহজ; পাশাপাশি সরাসরি কাউন্টার থেকেও দ্রুত টিকিট সংগ্রহ করা যায়।

ভ্রমণের আগে রুট, সময় ও ভাড়া সম্পর্কে সঠিক তথ্য জেনে নেওয়া খুবই জরুরি। এছাড়া রওনা দেওয়ার অন্তত আধা ঘণ্টা আগে টার্মিনালে পৌঁছে যাওয়া উচিত, যাতে কোনো অপ্রত্যাশিত ঝামেলা না হয়।
দীর্ঘ যাত্রায় আরামদায়ক সিট বেছে নেওয়া, পর্যাপ্ত পানি ও হালকা খাবার সঙ্গে রাখা ভালো অভ্যাস। নিরাপত্তার বিষয়েও সচেতন থাকা দরকার—বিশেষ করে রাতের বাস যাত্রায়।

সবচেয়ে বড় বিষয় হলো—বিশ্বাসযোগ্য অপারেটর বেছে নিন এবং অফিসিয়াল মাধ্যমেই টিকিট কিনুন। এতে প্রতারণার আশঙ্কা কমে যায়।
পরিকল্পিতভাবে যাত্রা করলে সাতক্ষীরা থেকে রাজশাহী পর্যন্ত দীর্ঘ ভ্রমণও হতে পারে আনন্দদায়ক, নিরাপদ ও স্মরণীয়।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *